জানা গেল যেভাবে পালিয়েছে বদির পরিবারের সদস্যরাও

বদির পরিবারের সদস্যরাও- চলমান মাদকবিরোধী অভিযানের মধ্যেই কক্সবাজার-৪ (উখিয়া-টেকনাফ) আসনের সরকারদলীয় সাংসদ আব্দুর রহমান বদি সৌদি আরব গেছেন। তার খালাতো ভাই মং মং সেন মিয়ানমারে পাড়ি জমিয়েছেন।

এছাড়াও ইয়াবা গডফাদার হিসেবে বদির পরিবারের যেসব সদস্যের নাম বিভিন্ন গোয়েন্দা সংস্থার তালিকায় রয়েছে তারা টেকনাফ ছেড়েছেন বলে স্থানীয় লোকজন ও আইন শৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর সূত্রে জানা গেছে।

ইয়াবা ব্যবসায়ী হিসেবে পাঁচটি গোয়েন্দা সংস্থার প্রতিবেদনে এমপি বদির নাম রয়েছে। এই তালিকাগুলোতে তার যেসব আত্মীয় ও সহযোগীর নাম রয়েছে তাদের মধ্যে রয়েছেন, বদির ভাই আব্দুল শুক্কুর ও মুজিবুর রহমান, সৎভাই আব্দুল আমিন ও ফয়সাল রহমান, শ্বশুর বাড়ির আত্মীয় শাহেদ কামাল, মামাতো ভাই কামরুল হাসান রাসেল ও ভাইপো শাহেদুর রহমান নিপু।

সর্বশেষ প্রতিবেদনে উখিয়া ও টেকনাফে ইয়াবা ব্যবসার পৃষ্ঠপোষক হিসেবেও নাম এসেছে সরকারদলীয় এই সাংসদের। মূলত এই দুই উপজেলা দিয়েই মিয়ানমার থেকে ইয়াবা ঢোকে বাংলাদেশে।

তালিকাটিতে মং মং সেন, মুজিবুর রহমান ও আব্দুল্ল শুক্কুরের নাম এসেছে যথাক্রমে ৫,৬ ও ৭ নম্বরে। তাদের সবাইকে ইয়াবা গডফাদার হিসেবে উল্লেখ করা হয়েছে। প্রতিবেদনটিতে বলা হয়, পর্দার আড়াল থেকে ইয়াবা বাণিজ্য নিয়ন্ত্রণ করেন বদি। ক্ষমতাসীন দলের সাংসদ হওয়ার সুবাদে প্রচুর সংখ্যক সহযোগীকে নিয়ে বিনা বাধায় তিনি এই ব্যবসা চালিয়েছেন।

ইয়াবা ব্যবসায় বদির প্রভাব সম্পর্কে আরও বলা হয়, বদির বিরুদ্ধে গিয়ে কোনো শীর্ষ মাদক ব্যবসায়ী তার ব্যবসা চালানোর সাহস রাখে না বললেও অত্যুক্তি হবে না। স্থানীয় ইয়াবা ব্যবসায়ী ও চাঁদাবাজদের পক্ষেও প্রভাব বিস্তার করা অসম্ভব।

প্রতিবেদন অনুযায়ী ডিএনসি মনে করে, মিয়ানমার থেকে ইয়াবা চোরাচালান বন্ধে বদির আন্তরিকতা গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখতে পারে। তার বিরুদ্ধে দৃষ্টান্তমূলক ব্যবস্থা নেওয়া সম্ভব হলে অন্য মাদক ব্যবসায়ীরাও ভয়ে এই পথ ছেড়ে দেবে।

এই প্রতিবেদনের একটি কপি গত সপ্তাহে হাতে এসেছে। সংস্থাটির কর্মকর্তারা বলেছে, ইয়াবা গডফাদারদের নিয়েই পুরো প্রতিবেদনটি করা হয়েছে। অপর একটি গোয়েন্দা সংস্থার প্রতিবেদনে কক্সবাজারে ১২০ জন তালিকাভুক্ত মাদক ব্যবসায়ী রয়েছেন বলে উল্লেখ করা হয়েছে। স্বাভাবিকভাবে এই তালিকায় সবার ওপরে রয়েছেন বদি।

যে পাঁচটি গোয়েন্দা সংস্থা তালিকা তৈরি করেছে তার প্রত্যেকটিতে অন্তত ১২ জন করে মাদক ব্যবসায়ীর নাম এসেছে। সূত্রগুলো বলছে, এদের মধ্যে বদির পরিবারের সদস্যদের নাম রয়েছে।

এর মধ্যে গত ৪ মে থেকে আইন শৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী মাদকবিরোধী অভিযান শুরু করে। প্রথম থেকেই সবার দৃষ্টি ছিল টেকনাফ ও কক্সবাজারের দিকে। আরও সুনির্দিষ্টভাবে বলতে গেলে বদি ও তার পরিবারের দিকে।

তখন থেকে প্রায় ১৩ হাজার জনকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। কথিত বন্দুকযুদ্ধে নিহত হয়েছেন অন্তত ১২৯ জন। কিন্তু রহস্যজনকভাবে বদি ও তার পরিবারের সদস্যরা এখনও ধরাছোঁয়ার পুরোপুরি বাইরে।